Sunday, 28 January 2018

বাধ্যতামূলক হচ্ছে শিক্ষাবীমা


উপার্জনকারী ব্যক্তি হিসেবে পিতা-মাতার মৃত্যু বা অক্ষমতা অনিশ্চয়তায় ফেলে দেয় সন্তানের শিক্ষা গ্রহণ। আর্থিক সংকটে স্কুল থেকে ঝরে পড়ার ঘটনাও কম নয়। অভিভাবকের মৃত্যু বা শারীরিক অক্ষমতার পরও সন্তানের শিক্ষা গ্রহণ যাতে অব্যাহত থাকে, সেজন্য স্কুল ব্যাংকিংয়ের সঙ্গে শিক্ষাবীমা বাধ্যতামূলক করছে সরকার।

এরই মধ্যে এ-সংক্রান্ত নীতিমালার খসড়া প্রণয়ন করেছে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)। খসড়া নীতিমালা অনুযায়ী, অভিভাবকের মৃত্যু বা অক্ষমতার কারণে প্রতি মাসে ১ হাজার টাকা করে পাবে শিক্ষার্থীরা। বীমাটি বাধ্যতামূলক করতে বাংলাদেশ ব্যাংক ও আইডিআরএ শিগগিরই শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করবে বলে জানা গেছে।

আইডিআরএ বলছে, এরই মধ্যে ১২ লাখের বেশি শিক্ষার্থী স্কুল ব্যাংকিংয়ের আওতায় এসেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের উদ্যোগের ফলে এখন স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা ব্যাংকমুখী হয়েছে। বড়দের মতোই তাদের মধ্যেও সঞ্চয়ের মনোভাব তৈরি হয়েছে। তবে স্কুল ব্যাংকিংয়ের সঙ্গে বীমা বাধ্যতামূলক করলে এ হার আরো বাড়বে বলে মনে করছে তারা।

আইডিআরএ সদস্য গকুল চাঁদ দাস এ প্রসঙ্গে বণিক বার্তাকে বলেন, আমরা একটি খসড়া নীতিমালা তৈরি করেছি। পলিসি তৈরির জন্য অ্যাকচুয়ারি নিয়োগ দেয়া হয়েছে। শিগগিরই বাংলাদেশ ব্যাংক, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও আইডিআরএর সমন্বয়ে বাধ্যতামূলকভাবে এটি বাস্তবায়নের পদক্ষেপ নেয়া হবে।

প্রস্তাবিত খসড়া নীতিমালায় বলা হয়েছে, শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন সুরক্ষার জন্য ব্যাংক হিসাবের সঙ্গে বীমা সুবিধা প্রচলনের জন্য এ নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে। বাবা, মা বা অভিভাবকদের মৃত্যু ও অক্ষমতায় আর্থিক সংকটের কারণে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া যেন বিঘ্নিত না হয়, সেজন্য ন্যূনতম প্রিমিয়ামের বিপরীতে শিক্ষার্থীদের পূর্বনির্ধারিত বীমার টাকা দেয়া হবে। ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছড়িয়ে দেয়া হবে এ উদ্যোগ।

খসড়া নীতিমালা অনুযায়ী, নতুন এ পলিসির ধরন হবে নবায়নযোগ্য মেয়াদি গ্রুপ জীবন বীমা। ব্যাংক ও বীমা কোম্পানির দ্বিপক্ষীয় চুক্তির মাধ্যমে এটি কার্যকর হবে। এ পলিসির বীমা অংক হবে ১ লাখ টাকা। এছাড়া অভিভাবকের মৃত্যু ঘটলে ১৮ বছর বয়স পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের প্রতি মাসে ১ হাজার টাকা করে প্রদান করবে সংশ্লিষ্ট বীমা কোম্পানি। প্রিমিয়ামের হার হবে মাসে ২৫ টাকা করে বছরে ৩০০ টাকা। ব্যাংক বার্ষিক ভিত্তিতে এ প্রিমিয়াম প্রদান করবে।

প্রস্তাবিত নীতিমালায় শিক্ষার্থীদের সর্বনিম্ন বয়স ধরা হয়েছে পাঁচ বছর ও সর্বোচ্চ ১৭ বছর। পাশাপাশি অভিভাবকদের বয়স হবে ২৫ থেকে ৬৫ বছর। এছাড়া পলিসির মেয়াদ নির্ধারণ করা হয়েছে সর্বনিম্ন এক বছর ও সর্বোচ্চ ১২ বছর।

শিক্ষাবীমা সুবিধা গ্রহণের পরবর্তী মাসের ১ তারিখ থেকে তা কার্যকর হবে। শিক্ষার্থীর বয়স ১৮ ও অভিভাবকের বয়স ৬৫ বছর পূর্ণ হলেই বীমা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে বিবেচিত হবে।

মেঘনা লাইফ ইন্স্যুরেন্সের চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দীন আহমেদ বলেন, এ ধরনের প্রডাক্ট আমাদের বীমা খাতে নতুন। এর মাধ্যমে বীমা খাতে যেমন বৈচিত্র্য আসবে, একইভাবে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের পাশেও দাঁড়ানো হবে।

খসড়া নীতিমালায় বলা হয়েছে, বীমা সুবিধা শুধু শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবনের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার জন্য দেয়া হবে। বীমা প্রতিষ্ঠান ব্যাংকের তথ্যের ওপর নির্ভর করবে এবং ব্যাংক প্রয়োজনীয় তথ্য সরবরাহ করবে। ব্যাংক ও বীমা প্রতিষ্ঠান উভয়ই তথ্যের গোপনীয়তা বজায় রাখবে। বীমা প্রিমিয়াম ও বীমা দাবি উভয়ই ব্যাংকের মাধ্যমে সম্পাদিত হবে।

নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের এ ধরনের উদ্যোগ প্রশংসার দাবিদার বলে মন্তব্য করেন প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জালালুল আজীম। তিনি বলেন, বাইরের দেশগুলোয় শিক্ষাবীমার বাধ্যবাধকতা থাকলেও আমাদের এখানে নেই। তবে সরকারের নতুন এ উদ্যোগ ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে শিক্ষার আলোয় আলোকিত করে তুলতে ভূমিকা রাখবে।

মাত্র ১৭শ টাকায় বিমা পলিসি করেই প্রবাসীরা এখন পেতে পারেন সাড়ে ৭ লাখ টাকা !


মাত্র ১৭শ টাকায় বিমা পলিসি গ্রহণ করে প্রবাসীরা পেতে পারেন সাড়ে ৭ লাখ টাকা প্রথমবারের মতো প্রবাসীবাংলাদেশিদের জন্য এই বিমা স্কিম নিয়ে এসেছে
‘গ্রিন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্স’বাংলাদেশ সরকার শিগগিরই প্রবাসীদের জন্য বিমা বাধ্যতামূলক করতে যাচ্ছেএক্ষেত্রে প্রবাসীদের জীবন ও অর্থনীতির সুরক্ষায় গ্রিন ডেল্টা সবচেয়ে বেশি এগিয়ে এসেছে। ২০১৩ সাল থেকে গ্রিন ডেল্টা মালয়েশিয়ায় কর্মরত বাংলাদেশি প্রবাসী শ্রমিকদের বিমা সুবিধা দিচ্ছে।

গ্রিন ডেল্টার হেড অব প্রোডাক্ট ডেভেলপমেন্ট, অপারেশন ও সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট সুভাশিষ বড়ুয়া বাংলানিউজকে জানান, তারাই বাংলাদেশের প্রথম কোনো ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি যারা প্রবাসী বিমা স্কিম চালু করেছেন।

তিনি জানান, প্রবাসীদের দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যুর কাভারেজসহ বাড়তি কিছু সুবিধা দিচ্ছে গ্রিন ডেল্টা। দুর্ঘটনায় মৃত্যুজনিত কারণে বিমা দাবির পুরো সাড়ে সাত লাখ টাকা দেবে এ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি। প্রবাসে মারা গেলে মরদেহ দেশে নিয়ে আসার জন্য পুরো খরচ বহন করবে গ্রিন ডেল্টা।

প্রবাসে কোনো ডকুমেন্ট বা পাসপোর্ট হারিয়ে গেলে তা পুনরায় করার টাকা দিচ্ছে দেশীয় এ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিটি।.‘প্রবাসে কাজ করতে গিয়ে কোনো অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ হানি বা বিকল্প অঙ্গ প্রতিস্থাপনেরও ব্যয় বহন করবে গ্রিন ডেল্টা। এছাড়া হুইলচেয়ার বা কৃত্রিম হাত-পা সংযোজনের খরচ বহন করবে। আবার যদি স্থায়ীভাবে হাত-পা কাটা পড়ে সে ক্ষেত্রে বিমা দাবির পুরো টাকাই পাবেন প্রবাসীরা।’

সুভাশিষ বাংলানিউজকে বলেন, বাংলাদেশ সরকার প্রবাসী বিমা বাধ্যতামূলক করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। শিগগিরই চালু হতে পারে। এতে মৃত্যুদাবির পাশাপাশি যৌক্তিক কারণে প্রবাসীরা চাকরিচ্যুত হলে পরবর্তী চাকরি না পাওয়া পর্যন্ত নির্দিষ্ট সময়ের জন্য অর্থসহায়তা পাবেন।

মালয়েশিয়া থেকে যে পরিমাণ রেমিটেন্স আসে সেই রেমিটেন্সের সঙ্গে এই প্রবাসী স্কিম যুক্ত করা গেলে সবচেয়ে ভলো হবে- মন্তব্য করেন গ্রিন ডেল্টার এই উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা।

তিনি বলেন, আমরা চেয়েছিলাম রেমিটেন্সের সঙ্গে বিমা পলিসি যুক্ত করতে। যাতে সবাই এতে যুক্ত হয়। এতে আমাদের মেধাবী ও দক্ষ পরিশ্রমী প্রবাসী শ্রমিকরা উপকৃত হবে। দেশের ৫০ লাখ শ্রমিক বিদেশে কাজ করছেন। তাদের ইন্স্যুরেন্স দেশেই করা গেলে দেশের টাকা দেশেই থাকবে।

তিনি জানান, গ্রিন ডেল্টা মালয়েশিয়ায় বসবাসরত বাংলাদেশি প্রবাসীদের জন্য প্রবাসী ইন্স্যুরেন্স চালু করে ২০১২ সালে। মালয়েশিয়ান একটি ইন্স্যুরেন্স সহযোগী নিয়ে যৌথভাবে প্রথম দিকে ২ হাজার লোককে পলিসি দেন তারা। সাড়ে ৪ থেকে ৫ হাজার লোক পলিসি গ্রহণ করেন।

মালয়েশিয়ায় কেন গ্রিন ডেল্টা প্রবাসী বিমা চালু করলো- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আশির দশক থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত প্রায় চার হাজার প্রবাসী বাংলাদেশি মালয়েশিয়ায় মারা গেছেন। এর মধ্যে শুধু ইন্স্যুরেন্স পেয়েছেন গুটিয়েকজন। এতো লোক মারা গেলেও এই বিমা সুবিধা তারা কোনোদিন হাতে পায়নি। মালয়েশিয়ান সরকারের নিয়মই ছিল প্রবাসীদের ইন্স্যুরেন্স থাকার বিষয়টি।

সে হিসেবে দেখা গেছে তিন মিলিয়ন রিঙ্গিতের (৫ কোটি ৭৯ লাখ টাকা) মতো বিমা দাবির টাকা মালয়েশিয়ায় পড়ে আছে। সেগুলো কেউ ক্লেইম করেনি। এর আলোকে মালেশিয়ায় এম এএ তাকাফুল-এর সঙ্গে যৌথভাবে আমরা বিমা স্কিম নিয়ে কাজ শুরু করি।

গ্রিন ডেল্টার মাধ্যমে প্রবাসে যাওয়ার আগেই বিমা সুবিধা করে যেতে পারবে। সরকার এটা সমন্বিতভাবে করার উদ্যোগ নিলে সব ইন্স্যুরেন্স প্রতিষ্ঠানও এটা চালু করতে পারে। বাংলাদেশ থেকে যখনই প্রবাসী যাবে তখন তার হাতে বিমা কাগজ থাকবে। এয়ারপোর্টে একটি বুথের মাধ্যমে এ সেবা দেওয়া সম্ভব বলেও মনে করেন সুভাশিষ।

অনলাইনে ফরম পূরণ করে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ দিলে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে প্রবাসীদের বিমা পলিসি দেবে গ্রিন ডেল্টা। এক্ষেত্রে পাসপোর্টের কপি, ওয়ার্কপামিটের কপি, বিদেশি কাজের পরিচয়পত্র বা আইসি, যে রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে গেছেন তার কাগজপত্র, মালয়েশিয়ায় যে ঠিকানায় বসবাস করেন ও যেখানে কাজ করেন তার ঠিকানা দিতে হবে।

Monday, 22 January 2018

Watch and Enjoy Insurance Fair Video

মার্কিন রাজনীতিতে এবার শিশু বীমা

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে নতুন করে সঙ্কট দেখা দিয়েছে। সরকার ও বিরোধীদের টানাপড়েনে বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম দেশটির সরকারি কর্মকাণ্ড। এমন পরিস্থিতিতে মার্কিন রাজনীতিতে যুক্ত হয়েছে দু'টি ইস্যু। এর একটি হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রে অনিবন্ধিত তরুণ অভিবাসীদের সুরক্ষা কর্মসূচি ‘ডাকা’ এবং অন্যটি হচ্ছে ‘চিপ’ নামে পরিচিত শিশু বীমা কর্মসূচি।

ক্ষমতাসীন রিপাবলিকান চাচ্ছে অন্যান্য জিনিসের চেয়ে সামরিক ব্যয় বাড়াতে। তবে সরকারি দলের এই প্রস্তাবে সমর্থন নেই বিরোধী দল ডেমোক্র্যাটদের। তাদের চাওয়া, যুক্তরাষ্ট্রে অনিবন্ধিত তরুণ অভিবাসীদের সুরক্ষা কর্মসূচি ‘ডাকা’র অধীনে যে আট লাখ তরুণ-তরুণী সাময়িকভাবে সে দেশে থাকার অনুমতি পেয়েছেন, তাদের ব্যাপারে কোনো স্থায়ী সমাধান।

তবে ডিফার্ড একশন ফর চাইল্ডহুড এরিভালস 'ডাকা' ঠেকাতে ডোনাল্ড জে ট্রাম্পের দল রিপাবলিকান সামনে এনেছে মার্কিন শিশুদের স্বাস্থ্য বীমা চিলড্রেন'স হেলথ ইন্স্যুরেন্স প্রোগ্রাম 'চিপ'। গত সেপ্টেম্বরে ফান্ড শেষ হয়ে যাওয়া শিশু বীমাটি সচল রাখতে আগামী ৬ বছরের জন্য অর্থ বরাদ্দের প্রস্তাব করেছে সরকারি দল। কিন্তু ডাকা'র বিষয়ে স্থায়ী সমাধান না হলে ব্যয় বরাদ্দের প্রশ্নে ডেমোক্র্যাটরা কোনো সমর্থন দেবেন না বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

এদিকে সরকারি কর্মকাণ্ড চালু রাখতে স্বল্পস্থায়ী ব্যয় বরাদ্দের একটি বিল গত বৃহস্পতিবার রাতে পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদে পাস হয়েছে। সরকারের অচলাবস্থা ঠেকাতে নিম্নকক্ষ আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময়সীমা বাড়িয়েছে। তবে বিলটিকে এখন উচ্চকক্ষ সিনেটেও পাস হতে হবে। এই বিল পাস না হলে কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মকাণ্ড শুক্রবার মধ্যরাতের পর বন্ধ হয়ে যেত। এরআগে ২০১৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রে ১৬ দিনব্যাপী অচলাবস্থা দেখা দিয়েছিল।

চিলড্রেন'স হেলথ ইন্স্যুরেন্স প্রোগ্রাম বা চিপ'র ওপর নির্ভর করছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ৯০ লাখ শিশুর স্বাস্থ্যসেবা। বীমা সুবিধাপ্রাপ্ত এসব শিশুর মধ্যে সাড়ে ৩ লাখই নিউইয়র্কের। ফেডারেলের চাহিদা ও নির্দেশনা মোতাবেক স্টেগুলোর দ্বারা পরিচালিত হয় শিশুদের এ স্বাস্থ্য বীমা কর্মসূচি। স্ট্রেটস ও ফেডারেল সরকার যৌথভাবে এতে অর্থায়ন করে। ১৯ বছর বয়স পর্যন্ত শিশুরা স্বাস্থ্য সেবা গ্রহণ করতে পারে এই বীমার আওতায়।

প্রেসিডেন্ট বিলক্লিনটন নিম্ন ও মধ্যম আয়ের পরিবারের শিশু ও অন্তসত্বা নারীদের স্বাস্থ্যসেবা প্রদানে ১৯৯৭ সালে চিলড্রেন'স হেলথ ইন্স্যুরেন্স প্রোগ্রাম বা চিপ চালু করেন। এরমাধ্যমে বীমাকৃত নারী ও শিশুদের কম্প্রিহেনসিভ সুবিধা প্রদান করা হয়। ফেডারেল নির্দেশনার আলোকে স্টেটগুলো নিজেদের প্রয়োজন অনুসারে সাজাতে পারে এ কর্মসূচি। একারণে বিভিন্ন স্টেটে চিপ'র সুবিধার ধরণ ভিন্ন ভিন্ন হয়।

স্টেটগুলো বীমা সুবিধা পাওয়ার ক্ষেত্রে শিশুদের পরিবারের বার্ষিক আয়ের ভিত্তিতে মানদণ্ড তৈরি করে, যা বিভিন্ন স্টেটে বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে। কলাম্বিয়ার ৪৬টি স্টেটস ও ডিস্ট্রিক্ট-এ ফেডারেল প্রোভার্টি লেভেল (এফপিএল)'র ২০০ শতাংশের ওপর পর্যন্ত এবং ২৪টিতে ২৫০ শতাংশ পর্যন্ত আয়ের পরিবারের শিশুদের স্বাস্থ্য বীমা সুবিধা প্রদান করে। তবে এফপিএল'র ৩০০ শতাংশ পর্যন্ত এই মানদণ্ড নির্ধারণ করতে পারে স্টেট।

চিলড্রেন'স হেলথ ইন্স্যুরেন্স প্রোগ্রাম এর মাধ্যমে সাধারণ সকল ধরণের মেডিকেল সুবিধা প্রদান করা হয়। আর্লি এন্ড পেরিয়ডিক স্ক্রিনিং, ডায়াগনিস্টিক, এন্ড ট্রিটমেন্ট বা ইপিএসডিটি সেবাও দেয়া হয় এই স্বাস্থ্য বীমায়। ইপিএসডিটি'র মধ্যে মানসিক স্বাস্থ্য ও দাঁতের সেবাও অন্তর্ভূক্ত।

চিপ- এ অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে স্টেটগুলো পছন্দমতো সীমিত ফি, প্রিমিয়াম, ডিডাক্টিবলস, কোইন্স্যুরেন্স এবং শিশু ও অন্তসত্বা নারীদের জন্য কোপেমেন্টস নির্ধারণ করতে পারে। যা সাধারণত বীমাবৃতের পরিবারের বার্ষিক আয়ের ৫ শতাংশের মধ্যে সীমিত। সুস্থ নবজাতক ও শিশুদের ডাক্তার দেখানোসহ কিছু ক্ষেত্রে খরচ ভাগাভাগি নিষিদ্ধ। মেডিকেইড কস্ট শেয়ারিং নীতিমালা মেনেই স্টেটগুলোকে বর্ধিত মেডিকেইড কর্মসূচি বাস্তবান করতে হয়।

এরআগে ২০০৮ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার আগে বারাক ওবামা তার নির্বাচনী ইশতেহারে স্বাস্থ্যসেবাকে সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে এনে দেয়ার অঙ্গীকার করেছিলেন। স্বাস্থ্যসেবা নীতি ও পদ্ধতিতে বীমা শিল্পের ব্যবহারের চমক দেখিয়ে আমেরিকানদের মন জয় করেন ওবামা। ক্ষমতায় এসে চালু করেন প্যাশেন্ট প্রোটেকশন অ্যান্ড অ্যাফোর্ডেবল কেয়ার অ্যাক্ট (পিপিএসিএ), বা সংক্ষেপে অ্যাফোর্ডেবল কেয়ার অ্যাক্ট (এসিএ)। যা পরিচিতি লাভ করে  ‘ওবামাকেয়ার’ নামে।

স্বাস্থ্যসেবা শিল্প পুনর্গঠন করতে ২০১০ সালের ২৩ মার্চ প্রেসিডেন্ট ওবামার দ্বারা অ্যাফোর্ডেবল কেয়ার অ্যাক্ট আইনে পরিণত হয়। আর ২০১২ সালের ২৮ জুন সুপ্রীমকোট এটিকে স্বীকৃতি দেয়। ওবামাকেয়ারের উদ্দেশ্য হলো- সাশ্রয়ী মূল্যে মানসম্মত স্বাস্থ্যবীমায় আমেরিকানদের আরো প্রবেশাধিকার দেয়া এবং দেশের স্বাস্থ্যসেবার ক্রমবর্ধমান খরচ কমানো।